বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন একটি তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন ৪০ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা বলেছেন, বর্তমান অবস্থায় প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তাই জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে সংসদ ভেঙে দিয়ে পরের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হোক।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গর্ভনর সালেহ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন প্রমুখ।
আজ রবিবার এক বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের নির্বিচারে মামলা, গ্রেপ্তার, বিতর্কিত প্রক্রিয়ায় সাজা প্রদান ও নির্যাতনের মাধ্যমে নির্বাচন এমনকি রাজনীতির মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৭ জানুয়ারি সরকারি দলের মনোনীত প্রার্থীদের সঙ্গে কেবল তাদেরই ডামি প্রার্থী ও অনুগত দলগুলোর প্রার্থীদের নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ফলে এই নির্বাচনে পছন্দমতো যথার্থ বিকল্প বেছে নেওয়া থেকে বাংলাদেশের নাগরিকরা বঞ্চিত হবেন এবং নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকৃত জনপ্রতিনিধিত্ব নির্ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বিশিষ্ট ৪০ নাগরিকের পক্ষে গণমাধ্যমে ওই বিবৃতিটি পাঠানো হয়েছে।
এতে বিবৃতিদাতারা বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যে বিরোধী দলের প্রতি দমননীতি অব্যাহত রাখলে সরকারের বৈধতার সংকট থেকেই যাবে। সমাজে ক্ষোভ ও বিরোধ বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের শক্তি, সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ বিপর্যস্ত হবে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সকল দলের অংশগ্রহণ ও সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে নতুনভাবে নির্বাচন আয়োজনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে সংবিধানের ১২৩(৩)(খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে এর পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানাচ্ছি।
এ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ আয়োজন, সমঝোতায় পৌঁছনো, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি বা জামিন প্রদান এবং নতুন তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন আয়োজনের পর্যাপ্ত সময় ও সুযোগ পাওয়া যাবে।
বিবৃতিতে বাকি স্বাক্ষরকারীরা হলেন সুপ্রিম কোর্টের অসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আবদুল মতিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব আলী ইমাম মজুমদার, সাবেক সচিব সৈয়দ মারগুব মোর্শেদ, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত এ বি এম সিরাজুল ইসলাম, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, রোবায়েত ফেরদৌস, সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল, লেখক ও অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সি আর আবরার।
বিবৃতিতে আরো স্বাক্ষর করেছেন সোয়াস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের অধ্যাপক ও গবেষক স্বপন আদনান, পাওয়ার সেলের সাবেক মহাপরিচালক রহমতুল্লাহ, ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন মুরশিদ, সাংবাদিক কামাল আহমেদ, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ফারুক ফয়সাল, ব্যবসায়ী আব্দুল হক, আইনজীবী তবারক হোসেন, মানবাধিকারকর্মী শিরিন হক, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউ, চট্টগ্রাম) উপাচার্য মুহাম্মদ সিকান্দার খান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, সুজনের চট্টগ্রাম জেলা শাখার সম্পাদক আখতার কবীর চৌধুরী, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারভীন হাসান, ক্লিনিক্যাল নিউরোসায়েন্স সেন্টার ও বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক নায়লা জামান খান, অধ্যাপক মোবাশ্বের হাসান, মানবাধিকারকর্মী হানা শামস আহমেদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, শিক্ষক এ আর রাজী, লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ও মানবাধিকারকর্মী রোজিনা বেগম।
Leave a Reply